অজানাকে জানা

শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কলিযুগ

আক্ষরিকভাবে কলির যুগ বা পাপের যুগ হল হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী চার যুগের শ্রেষ্ঠ যুগ।অন্য যুগ গুলো হল, সত্যযুগ,ত্রেতাযুগ,দ্বাপরযুগ।মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পূর্নিমা তিথিতে শুক্রবারে কলিযুগের উৎপত্তি।এর পরিমান ৪৩২০০ বছর।পূণ্য এক ভাগ পাপ তিন ভাগ।অবতার কল্কি।মানুষের আয়ু ১২০ বছর।নিজের হাতে সাড়ে তিন হাত,নিজের শরীরের আয়তন।প্রান অন্নে।তীর্থ গঙ্গা।সব পাত্র ব্যবহার করা হয়।ধর্ম সংকোচিত,মানুষ্ তপস্যাহীন।সত্য থেকে দূরে অবস্থানরত।শাসক ধনলোভী,ব্রাক্ষন শাস্রহীন।পুরুষ স্ত্রীর অনুগত,পাপে অনুরক্ত।সৎ মানুষের কষ্টবৃদ্বি,দুষ্টের প্রভাব বৃদ্ধি। তারক বৃক্ষ নাম,হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ  হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।

সময় পরিমান
বেদব্যাস রচিত বিষ্ণু পুরানে বলা হয়েছে,কৃষ্ণের পৃথিবী ত্যাগ করে স্বর্গারোহন সময় থেকে পৃথিবীতে কলিযুগের সূচনা হয়েছে।

সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬

জীব গোস্বামীর জীবনী

জীব গোস্বামী (আনুমানিক ১৫১৪-১৫১৮) ছিলেল রূপ সনাতনের ভাতুষপুত্র,রামকেলিতে তার জন্ম।জীবের প্রাথমিক শিক্ষা জীবন গৌড়ে অতিবাহিত হয়।পরে নিত্যনন্দের সঙ্গে স্বাক্ষাতের জন্য তিনি নবদ্বীপ যান,এবং তার আদেশে কাশীতে পন্ডীত মধুসূদন বাচস্পতির নিকট নানা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।এখানেই পিতৃব্য রূপ,সনাতনের সঙ্গে তার স্বাক্ষাত হয়,এবং রূপ গোস্বামী তাকে বৈষনব ধর্মে দীক্ষা দেন।তাদের সানিধ্যে জীব জ্ঞানসাধনায় আরো উৎকর্ষ লাভ করেন।তাদের তিরোধানের পর জীব গোস্বামী বৃন্দাবনে গৌড়ীয় বৈষনব সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দেন।কৃষ্ণ মূর্তির বামে রাধা মূর্তি বসিয়ে যুগল রূপে পূজা প্রবর্তনে তিনি উৎসাহী ছিলেন।জীব বাল্যকাল থেকেই শ্রীচৈতন্যের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন।দীক্ষা গৃহনের পর তার সেই অনুরাগ আরো বৃদ্ধি পায়।চৈতন্য তথা বৈষনব ধর্ম তাকে মোহিত করে।তিনি বৈষনব ধর্ম ও তন্ত্র বিষয়ক নানা গৃন্থ রচনা করেন।তার রচিত ষটসন্দর্ভ একটি বিখ্যাত দার্শনিক গৃন্থ।এতে ছয়টি সন্দর্ভ বা অধ্যায় আছে এবং তাতে বিভিন্ন দার্শনিক তত্ব আলেচিত হয়েছে।জীব গোস্বামীর রচিত আরে কয়েকটি গৃন্থ হল:গোপাল চম্পু,হরিনামামৃত ব্যাকরন,ধাতুৃৃমূত্র মালিকা,মাধবমহোৎসব,সংকল্পদ্রম ও সারসংগৃহ,এছাড়াও তিনি উজ্জ্বলনীলামনি,ভক্তিসারমৃতসিন্ধু, গোপাল তাপনী ও ভাগবতের টীকা রচনা করেন।

বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৬

গোপাল ভট্র জীবনী

গোপাল ভট্ট(আনুমানিক ১৫০০-১৫৮৫)দক্ষিন ভারতের অধিবাসী ছিলেন।মুরারী গুপ্তের কড়চা থেকে জানা যায় যে তার বাল্যকাল চৈতন্যদেবের দাক্ষিণাত্যের যাত্রার পথে তাদের গৃহে আথিত্য গৃহন করেন।তখন চৈতন্যদেবের প্রতি তার ভক্তি দেখে পিতা ত্রিমল ভট্র(মতান্তরে বেঙ্কক ভট্র) পুত্রকে পিতার চরনে সমর্পন করেন।চৈতন্যদেব তাকে আর্শীবাদ করেন এবং তারই আদেশে পিতামাতার সেবান্তে বৃন্দাবনে গিয়ে তিনি অন্যান্য গোস্বামীর স্বাক্ষাত লাভ করেন।চৈতন্যদেব নীলাচল থেকে তার জন্য নিজ কোপিন ও একটি কাচের আসন পাঠান।বৃন্দাবনে কাচের পিড়া নামক সেই আসনটি রাধার মন মন্দিরে এখনও পূজিত হয়।এই মন্দিরের পিছনেই গোপালের সমাধি রয়েছে।গোপাল সংস্কৃত ভাষায় ও দর্শনে সুপন্ডিত ছিলেন।তিনি কৃষ্ণ কথামৃত নাটকের শ্রীকৃষ্ণবল্লভা নামে একটি টীকার রচনা করেন।রূপ,সনাতনের মুখে তত্ব বিচার শুনে তিনি সূত্রাকারে ষটসন্দর্ভ গৃন্থের একটি কারিকা লেখেন।সংস্কৃত সাহিত্য পরিষৎ গৃন্থাগারে গোপাল ভট্রের লেখা দান খন্ড নামে একটি পুথি(নং ৪২৭) আছে।হরিভক্তি বিলাস নামে অপর একটি গৃন্থ গোপাল ভট্রের লেখা বলে কথিত আছে।যদিও কারো কারো মতেহ রিভক্তি সনাতনের রচনা,গোপাল পরে এর বিষয় বস্তুকে বিস্তৃত করেন।

রঘুনাথ ভট্র জীবনী

রঘুনাথ ভট্র(আনুমানিক ১৫০৬-১৫৮০) বৃন্দাবনে লুপ্ততীর্থ ও লুপ্তবিগৃহ উদ্বার করে গুরূত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন।এছাড়া বর্তমানে বৈষনব যে ৮৪ ক্রোশ বন পরিক্রমা করেন,সেগুলি নির্ধারনে তার অবদান ছিল।রঘুনাথের পিতার নাম তপন মিশ্র।শ্রীচৈতন্য পূর্ববঙ্গ ভ্রমনে এসে পদ্মার তীরবর্তী রামপুর গ্রামে তপন মিশ্রের আতিথ্য গৃহন করেন এবং তার পর রঘুনাথকে ভক্তিতত্ব শিক্ষা দেন।রঘুনাথ কাশিতে বিবিধ শাস্ত্র অধ্যয়ন করে পান্ডিত্য অর্জন করেন।তিনি নীলাচলে শ্রীচৈতন্যের লীলা পৃত্যক্ষ করেন।পিতা,মাতার মৃত্যুর পর তিনি বৃন্দাবনে যান এবং রূপ সনাতনের সঙ্গ লাভ করেন।সেখানে তিনি ভাগবতের শ্রেষ্ঠ পাঠক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬

রঘুনাথ দাস জীবনী

রঘুনাথ দাস( আনুমানিক ১৪৯০-১৫৭৭)সপ্তগ্রামের হরিপুর নামক স্থানে জন্ম গৃহন করেন।তিনি গৃহ পুরোহিত বলরাম আচার্যের নিকট শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।বাল্যকাল থেকে তার মধ্যে বৈরাগ্যের লক্ষন প্রকাশ পায়।তিনি হরিদাস ঠাকুরের ব্যক্তিত্ব ও ভক্তিতে মুগ্ধ হয়ে তার সেবা গৃহন করেন।এবং যবন হরিদাসের কৃষ্ণ ভজন হন।এ সময় চৈতন্যদেবের নাম শুনে তিনি তার চরনে নিজেকে সমর্পন করেন,এবং একদিন গোপনে গৃহত্যাগ করে তার সঙ্গে নীলাচলে মিলিত হন।চৈতন্যদেব তাকে স্বরূপ দামাদরের তত্বাবধানে অর্পন করেন।এজন্য রঘুনাথকে স্বরূপের রঘু বলা হত।রঘুনাথ ১৬ বছর নীলাচলে ছিলেন।শ্রীচৈতন্য ও স্বরূপ দামোদরের তীরোধানের পর তিনি বৃন্দাবনে রূপ,সনাতনের আশ্রয় গৃহন করেন।রথুনাথ নীলাচল ও বৃন্দাবনে নিত্য জীবচর্চায় ও প্রসাদ গৃহন কারীর নিয়ম পালন করতেন।তিনি রাধাকুন্ড ও শ্যামকুন্ড উদ্বার করেন,এবং রাধাকুন্ড সংস্কার করে বাকি জীবন সেখানে অতিবাহিত করেন।শেষ জীবনে তিনি আহার নিদ্রা ত্যাগ করে রাধাকুন্ডেশ্বরের তীরে বসে সবর্দা রাধাকৃষ নাম জপ করে নিংসঙ্গ জীবন যাপন করতেন।তার আচরন ও নিষ্ঠা গোস্বামীদের মধ্যে অতি বিরল।রঘুনাথ দাস রচিত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গৃন্থ হল,স্তবাবলী,দান চরিত বা শ্রীদানকোলচিন্তামনি,শ্রীনামচরিত ইত্যাদি।

রূপ গোস্বামীর জীবনী

রূপ গোস্বামী আনুমানিক(১৪৭০-১৫৫৯) ছিলেন সনাতনের অনুজ।রামকেলিতে তার জন্ম।তার পিত্রদত্ত নাম সন্তোষ।কিন্তু চৈতন্যদেব প্রদত্ত রূপ নামেই তিনি পরিচিত।রূপও সুলতান হুসেন শাহের দরবারে রাজ কর্মচারীর চাকরি করতেন।তিনি ছিলেন সুলতানের প্রধানের সচিব।রূপ গোস্বামী বাল্যকাল থেকেই ছিলেন কৃষ্ণ ভক্ত।চৈতন্যদেব যখন বিন্দাবনে যাচ্ছিলেন তখন রূপ তাকে প্রয়োগ দর্শন করান এবং তার নিকট ভক্তি তত্ব সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করেন।মহাপ্রভুর নির্দশে বৃন্দাবনে গিয়ে তিনি লুপ্ত তীর্থ ও লুপ্ত বিগৃহ উদ্বার করেন,এবংকয়েকটি বৈষনব গৃন্থ রচনা করেন।তার উল্লেখযোগ্য গৃন্থ হল হংসদূত,উদ্ধব সন্দেশ,বিদগ্ধমাধব,ললিতমাধব,দানকেলিকৌমুদি,ভক্তিরসামৃতসিন্ধু,উজ্জ্বলমীলমনি,নাটকচন্দ্রকা,বিলাপকুসমন্জালী উপদেশামৃত,গোবিন্দবিরুদাবলী,অষ্টাদশলীলা ইত্যাদি।ষড় গোস্বামীর মধ্যে রূপ গোস্বামী কবিত্ব শক্তি ও পান্ডিত্য শক্তি অধিক কেননা তিনি যেসব প্রামান্য গৃন্থ রচনা করেছেন,সেগুলো শুধু সংখ্যা হিসেবেই নয় কাব্য ও রসবিচারে উত্তম বলে বিবেচিত।

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬

রাজশাহী গোদাগাড়ি উপজেলার খেতুরীধাম

নরত্তোম দাস ঠাকুর,তার লীলা জীবনে তিনি কোনদিন ভোগবিলাসে মত্ত হননি।রাজশাহী জেলার খেতুরী ধাম বৈষনবদের মিলন মেলা।ঠাকুর নরত্তোম দাস সমস্ত বৈষনবদের একত্র করে খেতুরী সম্মেলনের আয়োজন করেন।তার এই মেলা খেতুরী মহাৎসব নামে পরিচিত।তার স্মারনে প্রতি বছর কার্তিক মাসে এই মহামেলা অনুষ্ঠিত হয়।